মিশরীয় ধনকুবের মোহাম্মদ আল ফায়েদ মারা গেছেন। এই ধনকুবেরের ছেলে দোদি আল ফায়েদ প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন। দোদি আল ফায়েদের বাবা।
ডায়ানা ও দোদির ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকীর এক দিন আগে গত বুধবার (৩০ আগস্ট) তিনি মারা যান বলে তার পরিবারের বরাতে খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
১৯৭০ সালে যুক্তরাজ্যে বসবাস শুরু করেন মোহাম্মদ আল ফায়েদ। তার আগে মধ্যপ্রাচ্যে বিশাল ব্যবসায়ীক সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন মিশরে জন্মগ্রহণ করা এই ধনাঢ্য ব্যক্তি। একদিন পরেই দোদি ও ডায়ানার ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। তার একদিন আগেই আল ফায়েদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করলো তার পরিবার।
এক বিবৃতিতে তার পরিবার জানায়, মিসেস মোহাম্মদ আল ফায়েদ, তার সন্তান এবং নাতি-নাতনিরা নিশ্চিত করতে চান যে তার প্রিয় স্বামী, তাদের বাবা এবং তাদের দাদা, মোহাম্মদ ফায়েদ বৃদ্ধ বয়সে শান্তিতে মারা গেছেন।
ব্রিটিশ প্রিন্সেস ডায়ানা ও তার ছেলে দোদি আল ফায়েদের মৃত্যুর পিছনে ব্রিটিশ রাজপরিবার জড়িত ছিল বলে অভিযোগ তুলেছিলেন ৯৪ বছর বয়সি আল ফায়েদ। তার অভিযোগ ছিলো ডায়ানা ও দোদির হত্যার পেছনে ব্রিটিশ প্রিন্স ফিলিপের ষড়যন্ত্র ছিল।
তিনি প্রথমে মধ্যপ্রাচ্য ও পরে ইউরোপে আবাসন, জাহাজ, নির্মাণকাজের ব্যবসার মাধ্যমে তিনি নিজের ও পরিবারের ভাগ্য গড়ে তোলেন। যুক্তরাজ্যে ডিপার্টমেন্ট স্টোর হ্যারডস, লন্ডনের ফুটবল ক্লাব ফুলহাম ও প্যারিসের রিতজ হোটেলের মতো নামকরা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন আল ফায়েদের দখলে থাকলেও সবসময়ই বহিরাগত হিসেবে তাকে মনে করা হত দেশটিতে।
এমনকি যুক্তরাজ্যে নাগরিকত্ব না পাওয়ায় প্রায়ই ফ্রান্সে চলে যাওয়ার হুমকি দিতেন তিনি। ফ্রান্সে আল ফায়েদকে সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার লিজিয়ন অব অনার দেয়া হয়েছিল।
লন্ডনের অভিজাত ডিপার্টমেন্ট স্টোর হ্যারডস কিনে নেয়ার পর স্টোরে তিনি ক্রেতাদের জন্যও পোশাকবিধি চালু করেন। হ্যারডসে তিনি প্রিন্সেস ডায়ানা আর দোদি-আল ফায়েদের ব্রোঞ্জের মূর্তি বসিয়েছিলেন।
ব্রিটিশ প্রিন্সেস ডায়ানা ও তার ছেলে দোদি আল ফায়েদের মৃত্যুর পর তাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল তা প্রমাণ করার জন্য ১০ বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়েছিলেন মোহাম্মদ আল-ফায়েদ।
মোহামেদ ফায়েদ১৯২৯ সালে মিশরের বন্দর শহরে জন্ম গ্রহণ করেন । ফিজি নামক ঠান্ডা পানীয় বিক্রির মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি। পরে সেলাই-মেশিন বিক্রয়কর্মী হিসাবেও কাজ করেছিলেন।