বিশ্বের যেকোনো দেশের সরকার ব্যবস্থায় অসাংবিধানিক পরিবর্তন ও সামরিক শাসকদের ক্ষমতা দখলের বিষয়ে নিন্দা করেছে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স। একই সঙ্গে সংঘাত-সহিংসতায় বাস্তুচ্যুতদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে এ নিন্দা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ এবং ফ্রান্স আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের প্রতি তাদের অটল প্রতিশ্রুতি, বিশেষ করে সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের নীতি এবং বহুপাক্ষিকতাবাদে অবিচল বিশ্বাসকে পুনর্ব্যক্ত করে। সে ক্ষেত্রে ফ্রান্স ও বাংলাদেশ সকল জাতির আঞ্চলিক অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। তারা নিশ্চিত করে যে ইউক্রেনের যুদ্ধ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন, বিশেষ করে জাতিসংঘের সনদের লঙ্ঘন এবং নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুতর হুমকি। তারা জাতিসংঘের সনদের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ন্যায্য ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সকল প্রচেষ্টার প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করে। তারা যুদ্ধের বৈশ্বিক পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তা আর্থিক, অর্থনৈতিক এবং খাদ্য ও শক্তি নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই হোক না কেন— সমস্ত জাতির ওপর প্রভাব ফেলে এবং সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য একসঙ্গে জড়িত হওয়ার জন্য তাদের প্রস্তুতির কথা জানায়।
এতে আরও বলা হয়, ফ্রান্স জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণ প্রক্রিয়ায় বিশেষ করে আফ্রিকায় বাংলাদেশের অগ্রণী অবদানের প্রশংসা করে। বাংলাদেশ এবং ফ্রান্স জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে এবং মিশনের আদেশ এবং প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষাপটে তাদের বাস্তবায়নের বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শ করতে তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করে। উভয় দেশই সরকারের অসাংবিধানিক পরিবর্তন এবং যেকোনো দেশে বেআইনি সামরিক দখলের নিন্দা করে এবং সংঘাত, সহিংসতা এবং নৃশংস অপরাধের কারণে বাস্তুচ্যুতদের জন্য জরুরি এবং নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তার আহ্বান জানায়।
এ ছাড়া বিবৃতিতে কয়েক বছর ধরে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেছে ফ্রান্স। উভয় দেশই আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন এবং পরিস্থিতি বজায় রাখার বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরে এমন পরিস্থিতি তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা যাতে তাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই তাদের পৈতৃক জন্মভূমিতে দ্রুত প্রত্যাবর্তন করা যায়।