শাহবাগ থানায় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের ঘটনার পুলিশের বরখাস্ত অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ এবং রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব আজিজুল হক মামুনের মাঝে হওয়া ঘটনা নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন যাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত সেই ডিএমপির ক্রাইম বিভাগে অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিন।
সানজিদা ৩৩তম বিসিএসের কর্মকর্তা। তিনি আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী। তাকে কেন্দ্র করেই মূল ঘটনার সূত্রপাত।
জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে এডিসি হারুন বারডেম হাসপাতালে সানজিদার সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন বলে তার স্বামী মামুনুল জানতে পারেন। পরে তিনি ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। সেখানে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে হারুনের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশ ফোর্স নিয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে মারধর করেন এডিসি হারুন।
এ ঘটনার পর হারুনকে প্রথমে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) বদলি করা হয়। পরে সোমবার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
যাকে কেন্দ্র করে এতো ঘটনা ঘটনা, সেই সানজিদা আফরিনই বলেন, এডিসি হারুন স্যার নির্দোষ, আমার স্বামী রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনই হারুন স্যারকে প্রথমে আঘাত করেছেন।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বেশ কয়েক দিন ধরে আমি বুকে মারাত্মক ব্যথা ভুগছিলাম। সেদিন (৯ সেপ্টেম্বর) পেইনটা একটু বেশিই হওয়ায় ডাক্তার দেখানোর সিদ্ধান্ত নেই। যেহেতু ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল হারুন স্যারের আওতার মধ্যে পড়ে তাই ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়ার জন্য আমি স্যারের হেল্প চেয়েছিলাম।
সানজিদা জানান, হারুন স্যার আসার পর ডাক্তার ম্যানেজ করে হলো। এরপর ডাক্তার কিছু টেস্ট দিলেন। আমি ব্লাড টেস্টের জন্য স্যাম্পল দিলাম। ঘটনার সময় আমি ইটিটি করানোর রুমে ছিলাম। সেখান থেকেই বাইরে হট্টগোলের শব্দ শুনি। পরে হারুন স্যারকেই চিৎকার করে বলতে শুনি ‘ভাই আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন কেন? আপনি তো আমার গায়ে হাত তুলতে পারেন না’। কিছুক্ষণ পর দেখতে পাই ওখানে আমার স্বামী আজিজুল হক মামুন। ওনার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছেলে ছিল। তারা হারুন স্যারকে মারতে মারতে ইটিটি রুমে নিয়ে এলেন।
‘এসময় আমি আমার স্বামী এবং তার সঙ্গে থাকা লোকজনের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি শুরু করছিলাম। তখন আমার হাজবেন্ড আমার গায়ে হাত তোলেন এবং স্যারকে বের করার চেষ্টা করছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর ফোর্স এলে তারা সেখান থেকে বের হয়ে যায়।’
সানজিদা আরও বলেন, হারুন স্যার আমার সিনিয়র কলিগ ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ঘটনার পর স্বামীর সঙ্গে আমার আর কোনো কথা হয়নি। আমি আমার অফিসেই আছি।