1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৭ অপরাহ্ন

প্রেমিককে বীয়ে করার জন্য সন্ত্রাসীদের দিয়ে নিজের স্বামীকে খুন

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : সোমবার, ১ মার্চ, ২০২১

নাছিমা বার বার ফোন করে তার স্বামী জিয়াকে। কই তুমি? দেরি কেন? ফোন পেয়ে জিয়া বললেন এই তো আসছি। বাইকে গতি বাড়ান। এর পর  ফোন বাজে। ধরে না জিয়া। সময় গড়ায়, ফোন বাজে। কোনো রিপ্লাই নেই। মধ্যরাতে খবর আসে। জিয়ার রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে বড় সড়কে। এমন খবর শুনে পাগলের মতো ছুটে যান নাছিমা প্রিয় স্বামীর রক্তাক্ত দেহ ধরে চিৎকার করে। কিন্তু বেঁচে নেই জিয়া।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ঘটনা। গভীর রাতে সড়কের ওপর খুন হন ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান। খুনের ঘটনায় থানায় মামলা করেন জিয়ার স্ত্রী নাছিমা। পুলিশ তদন্ত করে। কিন্তু অজ্ঞাত সেই খুনিদের শনাক্ত করতে পারে না পুলিশ। স্বামীকে হারিয়ে স্ত্রী দিশাহারা। স্বামীর খুনিদের গ্রেফতারে নাছিমা পুলিশের কাছে ধরনা দেন।

মামলার তদন্তের দায়িত্ব নেয় সিআইডি। নতুন করে তদন্ত শুরু করে। নয় মাস পর হত্যা মামলার রহস্যের জট খোলে সিআইডি। উন্মোচিত হয় খুনের রহস্য। তবে পুলিশ খুনিকে শনাক্ত করার পর গোয়েন্দারা হতবাক। খুনি আর কেউ নন, মামলার বাদী স্ত্রী নিজেই খুনি। আরও পাঁচ খুনির নাম-পরিচয় একে একে বের হয়। গ্রেফতার হন তারা। খুনের পর মামলার বাদী হওয়া স্ত্রী নাছিমাসহ পাঁচজনকে আসামি করে পরে দায়ের করা হয় আরেকটি খুনের মামলা। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, স্ত্রী নাছিমা প্রেমিককে বিয়ে করতে সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করে সন্ত্রাসীদের দিয়ে স্বামীকে খুন করেন। পুলিশকে বোকা বানাতে স্ত্রীই থানায় হাজির হয়ে স্বামী খুনের মামলার বাদী হন। পরে চার আসামিকে ধরার পর বের হয়ে আসে খুনি স্ত্রীর আসল রূপ। এর পর স্ত্রীকে আসামি করে নতুন আরেকটি মামলা করা হয়। জানা গেছে, সাতকানিয়ার বইয়ের দোকান ’আদর্শ লাইব্রেরি’ থেকে মধ্যম পুরানগড় নিজ বাড়িতে মোটরসাইকেলে ফিরছিলেন জিয়াউর রহমান। বাড়ির কাছাকাছি জনৈক আবুল মিয়ার বসতঘরের সামনে পৌঁছলে রাস্তার ওপর গাছের গুঁড়ি দেখতে পেয়ে মোটরসাইকেল থেকে নামেন। রাস্তায় নামার সঙ্গে সঙ্গেই ওতপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে খুন করে। ঘটনার পর জিয়ার স্ত্রী নাছিমা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানায় খুনের মামলা দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, স্বামী জিয়াউর রহমানকে খুন করিয়ে থানায় গিয়ে হত্যা মামলার বাদী হন স্ত্রী নাছিমা রহমান। তিন সন্ত্রাসী ও প্রেমিক দিয়ে বাস্তবায়ন করেন এ খুনের পরিকল্পনা। ২০ হাজার টাকা করে মোট ৬০ হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়া করেন তিনজনকে। প্রেমিক ডালিমকে বিয়ের স্বপ্নে হাবুডুবু খেয়েই এ খুনের ঘটনা ঘটান নাছিমা। প্রেমিকসহ চার খুনির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে এসেছে স্বামীকে খুন করতে স্ত্রীর যোগসাজশের চাঞ্চল্যকর তথ্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিষিদ্ধ প্রেমের এমন বীভৎস পরিণতি ঘটে। এমন ঘটনা প্রায়শই ঘটছে। নাছিমা চেয়েছিলেন, স্বামীকে খুন করে প্রেমিককে বিয়ে করে সুখে-শান্তিতে থাকবেন। কিন্তু তার এই গোপন ইচ্ছা পূরণ হয়নি। সুখের পরিবর্তে তার জীবন এখন দুঃখে ভরা। তিনি এখন চার দেওয়ালে বন্দী।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি