রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাব।
আজ শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধে ৭১’-এর ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিটি কাজে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে এবং স্বাধীনতার সুফল জনগণের কাছে পৌঁছাতে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আপনারা অংশ নিয়েছেন। দীর্ঘ সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে আপনারা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এই আন্দোলনের মধ্যমণি এবং নেতা। এটা অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক খেলা হয়েছে, অনেক নেতৃত্ব এসেছে। কিন্তু এই খেলায় বিজয়ী হচ্ছেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি জানতেন কীভাবে ধারাবাহিকভাবে রাজনীতি করতে হয়। বঙ্গবন্ধু ছিলেন জাতির পিতা, মানুষের অন্তরের কথা তিনি বুঝতেন এবং জানতেন।
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে মাতৃভাষা বাংলা আদায়ের আন্দোলনের মাধ্যমে যে দুর্গম পথের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তার পরিসমাপ্তি ঘটে। বঙ্গবন্ধু ছোটবেলায়ও অনেক মানবিক ছিলেন। যারা ক্ষুধার্ত তাদের অন্ন দিতেন। তিনি প্রতিটি ধাপে ধাপে বাঙালি চেতনাকে লালন করেছেন। তার অসাম্প্রদায়িক চেতনা, জাতীয়তাবাদী মনোভাব, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ সবকিছুতেই ছিল অন্যান্য সাধারণ। একটি অঙ্গুলির হেলানে সমস্ত জাতী ঐক্যবদ্ধ হয় এরকম উদাহরণ পৃথিবীতে আমরা খুঁজে পাই না। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা লাভ করলেও স্বাধীনতাবিরোধীদের চক্রান্ত থেমে থাকেনি। তারা এখনও সক্রিয় রয়েছে। তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সংবিধানকে তছনছ করেছে। ১৯৭১ সালের পরাজিত শত্রুরাই এসব করেছে। তাই সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলার মাটিতে সংগঠিত গণহত্যা বিংশ শতাব্দীর জঘন্যতম বৃহৎ গণহত্যা। ১৯৭১ সালের ১৩ জুন সাংবাদিক এন্থনি মাসকারেনহাসের লেখা যুক্তরাজ্যের ‘দি সানডে টাইমস’ পত্রিকায় গণহত্যার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশ এখন মর্যাদার আসনে আসীন। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, সেক্টরস কমান্ডার্স ফোরামের কার্যনির্বাহী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল আলম, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার সারওয়ার আলী, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ম, হামিদ এবং মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবিব।
সূত্র : বাসস