দুনিয়ার মুখ দেখার সাথে সাথে ভেঙে গেল নবজাতক উর্মীর স্বপ্ন।নেমে এলো সুন্দর পৃথিবীতে হাসি আলোর বদলে অন্ধকারের ছায়া। বঞ্চিত হলো উর্মী বাবা মা উভয়ের ভালোবাসা নিয়ে বেড়ে ওঠা সুন্দর একটা পরিবেশ থেকে।পেলোনা বাবার আদর, স্নেহ,পেলোনা বাবার ভালোবাসা, পেল না বাবার মিষ্টি শাসন। পারিবারিক দ্বন্দ্বের সুত্র ধরে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর পরই ভেঙে গেল উর্মীর বাবা-মার বৈবাহিক বন্ধন।মুসলিম আইনের রীতি অনুযায়ী ডিভোর্স হয়ে গেল তাদের। সামাজিক নীতি মেনে বাধ্য হয়ে ডিফোর্সের গ্লানী মাথায় নিয়ে বুক ভরা কষ্ট, চোখ ভরা জল, আর উর্মী নামের এই শিশু সন্তানটিকে কোলে নিয়ে উর্মীর মা রুবিনা আক্তার দিশেহারা হয়ে আশ্রয় হারিয়ে শেষ পর্যন্ত আশ্রয় হিসাবে বেছে নিলেন বাবার বাড়ী। সেখানেই শিশু উর্মী ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠলেন।বাবা ছাড়া একজন বেকার মা, সাধারণ একজন ঘরণী তার সন্তানকে কতটুকু সুখ স্বাচ্ছন্দে বড় করতে পারে সেটা আমরা এই সমাজে বসবাস করে উপলব্ধি করতে পারি।
অবহেলা অনাদরে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা উর্মীর পরিচয় – নামঃসফুরা আক্তার উর্মী। বাবাঃ আলমাস মিয়া। মাঃ রুবিনা আক্তার। গ্রামঃ পূর্ব বাউবিটি পূর্ব পাড়া। ডাকঘরঃ আব্দুল্লাহপুর। থানাঃ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ। জেলাঃ ঢাকা।
উর্মি জন্মের পরেই মায়ের সাথে মামা বাড়ী ধীরে ধীরে বড় হন। এভাবেই বিয়ের উপযুক্ত হলে তখনই তার বাবার প্রয়োজন হয়।এক সময় উর্মী তার বাবার বাড়ির ঠিকানা নিয়ে সেখানে আসে। তার বাবাঃআলমাস মিয়া ছিলেন প্রবাসী।বাবার ঠিকানা ফোন নম্বর জোগাড় করে বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে উর্মী।বিভিন্ন মান-অভিমানের পর বাবা তাকে সাদরে গ্রহণ করেন।এতদিন তার খোঁজ কেন নেই জানতে চাইলে তাঁর বাবা বলেন আমার তোমার কথা মনে পড়ে কিন্তু যোগাযোগ করতে পারিনা। তোমার কোন ফোন নাম্বার আমি জানিনা। তুমি আমার সন্তান। আমি তোমার প্রতি অন্যায় করেছি। তুমি আমাকে মাফ করে দিও। আমি তোমাকে বিয়ে করার অনুমতি দিলাম। আমার দোয়া তোমার সঙ্গে থাকবে। আমি আসছি দেশে তোমাকে তোমার বাড়ী নিয়ে আসবো। যে কথা সেই কাজ। দেশে ফিরেই উর্মীকে তার স্বামীসহ তার বাড়িতে নিয়ে যায়। কিছুদিন সেখানে বেড়ায়।অবশেষে তার বাবা আবার বিদেশে চলে যায়। তারপর সব সময় বাবা মেয়ের যোগাযোগ ছিল। হঠাৎ বাবা বললেন আমি আসছি। তোমাকে তোমার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিবো। তুমি আমার বড় সন্তান। তোমরা দুই ভাই দুই বোন আমার যা সম্পত্তি থাকবে সবাই সমান পাবে।নিয়তির লিখন না যায় খন্ডন। এ কথা বলার সাত দিন পরেই হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রীয়া বন্ধ হয়ে উর্মীর বাবা বিদেশের মাটিতেই ইন্তেকাল করেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)যথা নিয়মে লাশ দেশে পৌঁছায়। উর্মী তখনও মৃত বাবাকে দেখতে গিয়ে কদিন সেখানে থেকে আসে ।এরপর উর্মীর সৎ মাঃসাহিদা আক্তার। দুই ভাই দীপু, অপী ও বোন ঃপলি আক্তার বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করা শুরু করে। উর্মীকে সকল সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার লক্ষ্যে একের পর এক ষড়যন্ত্রের জাল বোনে।বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে উর্মীর কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে দস্তখত নিতে চায়।এবং উর্মীর এনআইডি কার্ড চার কফি ছবি বিভিন্ন পন্থায় নেওয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টা সহজ সরল উর্মী না বুঝলেও উর্মীর স্বামীঃআমিনুল হক হীরা বিষয়টি বুঝে ফেলে।তখন তাকে এসব দিতে না করে। এভাবে আল্লাহর ইচ্ছায় একের পর এক তার সৎ মাঃ সাহিদা আক্তার ও ভাই বোনের সকল ষড়যন্ত্র বিফলে যায়। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে ৬ নং বাস্তা ইউনিয়ন পরিষদ।দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সম্মানীত চেয়ারম্যান জনাবঃ হাজী আস্কর আলী।এবং মেম্বার জনাব শাহাবুদ্দিন এর নেতৃত্বে একটি পারিবারিক আদালতে বিচারের জন্য দুই পক্ষকে হাজির থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু উর্মীর পক্ষ থেকে উর্মী ও তার গর্ভধারিনী মাঃরুবিনা আক্তার। তার স্বামী সহ আরো অনেকে উপস্থিত হন। কিন্তু তার সৎ মাঃসাহিদা আক্তার ও ভাই বোনেরা কেউই নির্ধারিত দিন তথা ২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের উপস্থিত হন নাই। উল্লেখিত উর্মীকে তার বাবার সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রের তার পাঁচ চাচার মধ্যে জীবিত তিনজন (১) মালেক মিয়া. (২)হালিম মিয়া। ও(৩)মনির মিয়া জড়িত আছে।