দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্থায়ীভাবে মুক্তি দিতে এবং বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার।
সোমবার খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরের পক্ষে আবেদনটি নেওয়া হয়।
পরে ১২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে দাখিল করা আবেদন এবং আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে……খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ শর্তসাপেক্ষে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হলো।
শর্তদুটি হলো- ঢাকায় নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
এই প্রজ্ঞাপন হওয়ার আগে খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনে বলা হয়-
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সরকারের নির্বাহী আদেশে সপ্তমবারের মতো দুটি শর্ত সাপেক্ষে ৬ (ছয়) মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। তার মুক্তির মেয়াদ আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হবে।
বেগম জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন এবং তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ২০২১ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকার এভারকেয়ার হাপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ ৫৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর একই বছরের ১৯ জুন হাসপাতাল থেকে তিনি ছাড়া পান। কিন্তু পুনরায় তার স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হওয়ায় ১৩ সেপ্টেম্বর আবারো এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ৮০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় ফিরে আসেন।
পরে আরও ৭ বার তাকে জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে হয়। বর্তমানে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে বাসায় অবস্থান করলেও অধিকতর উন্নত চিকিৎসার অভাবে এবং কোভিড পরবর্তী বিরূপ প্রভাবে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিন্দুমাত্র উন্নতি হয়নি; উপরন্তু দিনের পর দিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। অতীব উদ্বেগের বিষয়, ইতোমধ্যে তিনি লিভার সিরোসিস এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন, যার আধুনিক চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়।
তিনি আগের মতোই উঠে দাঁড়াতে পারেন না, এমনকি কারো সাহায্য ছাড়া ওয়াশ-রুম কিংবা শয়নকক্ষের বাইরেও যেতে পারেন না। বেগম জিয়ার জীবন রক্ষার্থে ও তার শারীরিক সক্ষমতা ফিরিয়ে আনার জন্য জরুরী ভিত্তিতে উন্নতমানের ফিজিওথেরাপিসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে দেশের বাইরে অ্যাডভান্সড মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নেওয়া অত্যাবশ্যক। এমতাবস্থায়, সব শর্ত শিথিল-পূর্বক তাকে স্থায়ীভাবে মুক্তি এবং বিদেশে গমনের অনুমতি দেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
এদিকে ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে আইনের অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নাই বলে জানিয়েছেন।