আগামী ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন ট্রেনে চেপে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেডিয়াম মাঠে জনসভায় যোগ দেবেন সরকারপ্রধান। এর সাত দিন পর এই পথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
প্রাথমিকভাবে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে এই সেতু পাড়ি দিয়ে ওপার যাবে ছয়টি যাত্রীবাহী ট্রেন। তবে এই ৬টি ট্রেনের একটিও নতুন নয়। রুট পরিবর্তন করে চলবে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলো।
ট্রেনের রুট পরিবর্তন করতে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসানের কাছে একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। সেই প্রস্তাবনায় দেখা গেছে, ঢাকা-খুলনা-ঢাকা রুটের সুন্দরবন এক্সপ্রেস (৭২৫/৭২৬) ও চিত্রা এক্সপ্রেস (৭৬৩/৭৬৪), ঢাকা-বেনাপোল-ঢাকা রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস (৭৯৫/৭৯৬) ট্রেনকে যমুনা সেতুর পরিবর্তে পদ্মা সেতু দিয়ে চালানো হবে। এছাড়া ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটের আন্তর্জাতিক মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনও এই রুটে চালানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া ভাঙ্গা-রাজশাহী-ভাঙ্গা রুটের আন্তঃনগর মধুমতি এক্সপ্রেস (৭৫৫/৭৫৬) এবং খুলনা-গোয়ালন্দ ঘাট-খুলনা রুটের মেইল নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস (২৫/২৬) ট্রেন নতুন রুট দিয়ে ঢাকা পর্যন্ত আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী ৩ অক্টোবরের মধ্যে এই প্রস্তাবনা পাস হতে পারে বলে রেলওয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে। প্রস্তাবটি পাস হলে আপাতত ছয়টি ট্রেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাবে।
প্রস্তাবনার বিষয়ে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানান, আমরা একটি প্রস্তাবনা বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক বরাবর পাঠিয়েছি। যমুনা সেতু দিয়ে চলাচল করা কিছু ট্রেন পদ্মা সেতু হয়ে চলবে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকার কমলাপুর থেকে যশোর পর্যন্ত মোট ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৩ মে অনুমোদন করা হয়।
পরবর্তীকালে ২০১৮ সালের ২২ মে সংশোধনী প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) ভিত্তিতে প্রকল্পের কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি)।
১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথের মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথের উদ্বোধন হবে ১০ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের এক সপ্তাহ পর থেকে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে।