সাত সপ্তাহের বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়েজনের মাধ্যমে আর্থিক অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ক্রমেই আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা ভারতের লক্ষ্য তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তোলা।
১৯৮৭ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল ভারত। পরের বার শ্রীলংকাকে সঙ্গে নিয়ে ১৯৯৬ সালে এবং সর্বশেষ ২০১১ সালে শ্রীলংকা ও বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করেছিল তারা। এবার একাই ৪৮টি ম্যাচের টুর্নামেন্টটি আয়োজন করতে যাচ্ছে ভারত। দেশের ১০টি আলাদা ভেন্যুতে ৪৬ দিন ধরে চলবে বিশ্বকাপ।
এশিয়া কাপ খেলতে ভারতীয় দল সীমান্তবর্তী পাকিস্তান সফরে জানায়। যে কারণে আংশকা ছিল পাকিস্তান হয়তোবা পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে বিশ^কাপ খেলতে ভারত সফরে অস্বীকৃতি জানাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান সেই পথে না হাটায় ভারতীয়দের জন্য টুর্নামেন্টের আয়োজন কারাটা আরও সহজ হয়ে গেছে।
মুলত আশঙ্কার কারণেই টুর্নামেন্টের সুচি নির্ধারন করতে হয়েছে দেরিতে। প্রথম বল মাঠে গড়ানোর মাত্র তিন মাস আগে চূড়ান্ত হয় ম্যাচ সূচি। এদিকে সূচি অনুযায়ী আহমেদাবাদে চির বৈরি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটির সূচি ফের পরিবর্তন করতে হয়েছে নিরাপত্তার কারণে। ম্যাচের তারিখ একদিন এগিয়ে আনার কারণে পরিবর্তন করতে হয়েছে আরো নয়টি ম্যাচের সূচি।
২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে পাকিস্তান সর্বশেষ ভারত সফর করেছি। এরপর এই প্রথম ক্রিকেট খেলতে ভারতে এসেছে পাকিস্তান। আগামী ৫ অক্টোবর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড বনাম নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠছে ৫০ ওভারের ওয়ানডে বিশ্বকাপের। আর টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে।
ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নামের স্টেডিয়ামটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ভেন্যুটির ধারন ক্ষমতা ১ লাখ ৩০ হাজার। বিশাল ওই ভেন্যুতেই আগামী ১৪ অক্টোবর পরস্পরের মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। ২০৩৬ সালের অলিম্পিকের আয়োজক হতে চাওয়া ভারত যদি সফল হয় তাহলে এই আহমেদাবাদই হবে অলিম্পিকের সম্ভাব্য ভেন্যু।
জনসংখ্যার দিক থেকে চীনকে ছাড়িয়ে যাওয়া ভারত এক সময়ের শাসক ব্রিটিশদের হটিয়ে ২০২১ সালে বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। এখন বিশ্বমঞ্চে নিজেদের শক্ত ঘাটি খুঁজে বেড়াচ্ছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইতোমধ্যে দুইবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করেছে ভারত। কপিল দেবের নেতৃত্বে প্রথমবার ১৯৮৩ আসরের বিশ^কাপ শিরোপা জিতেছিল ভারত। এরপর নিজ মাঠে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ২০১১ সালে দ্বিতীয়বার বিশ^কাপ শিরোপা ঘরে তোলে টিম ইন্ডিয়া।
ভারতীয় দলের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণার নাম বিরাট কোহলি। ওয়ানডে ফরম্যাটে যার রয়েছে ১৩ হাজারেরও বেশি রান। ১০ হাজারের ও বেশি রান নিয়ে তার পরেই রয়েছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে শীর্ষ বোলারের আসন দখল করে আছেন ভারতের সিমার মোহাম্মদ সিরাজ। আর লেগ স্পিনার কুলদীপ যাদব তার নিত্যনতুন কৌশল দিয়ে ক্রমেই নিজের প্রভাব বাড়িয়ে চলেছেন।
কোহলি বলেন, ‘২০১১ সালের বিশ্বকাপ জয়ের মুহুর্তটি আমাদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। আমাদের সমর্থকদের জন্য আমরা নতুন স্মৃতি গড়তে করতে চাই।’