দেশে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন এবং উৎপাদিত ডিভাইস রফতানির ওপর গুরুত্ব দিতে গবেষক ও উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (০৪ মার্চ) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, এনএসটি ফেলোশিপ এবং গবেষণা-অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এ পরামর্শ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রফতানি খাতে আমরা শুধু একটা বা দুইটা পণ্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে বহুমুখী পণ্য উৎপাদন করে রফতানি করতে পারি। তার মধ্যে যেমন ডিজিটাল ডিভাইসগুলো। অর্থাৎ এখন আমরা যেহেতু ডিজিটাল বাংলাদেশ, কাজেই এ ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন আমরা কিন্তু সেগুলো করতে সক্ষম, আমরা তা পারি।
নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন ও রফতানির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক সুযোগ রয়েছে, আমাদের রফতানি পণ্য বাড়াতে হলে কিন্তু গবেষণার প্রয়োজন আছে। কাজেই আমি আশা করি, সবাই নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন এবং আমাদের রফতানি যেন অব্যাহত থাকে, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন।
শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, প্রতিটি শিল্প কারখানায় গবেষণা ও উন্নয়ন শাখাকে কার্যকরী ও শক্তিশালী করতে হবে। গবেষণার মধ্য দিয়ে আমরা ব্যয় কমাতে পারি। উৎপাদনে উৎকর্ষতা বাড়াতে পারি, পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এরই মধ্যে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি, যেসব অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। সেখানেও গবেষণা একান্ত প্রয়োজন।
দেশকে এগিয়ে নিতে গবেষণা ও বিজ্ঞান চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, গবেষণা ও বিজ্ঞানের প্রসার একটা দেশের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। কাজেই আপনারা এ গবেষণা চালিয়ে যাবেন। আপনাদের পথ ধরে আগামী প্রজন্মও এ বিজ্ঞানের গবেষণা করবে বলে আশা করি। বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে আমরা এগিয়ে যাবো। গবেষণায় আরও জোর দিতে হবে, যাতে বাংলাদেশ যেন জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে সেটাই আমরা চাই।
মানবকল্যাণে গবেষণার তাগিদ দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, মানবকল্যাণেই কাজ করতে হবে। আপনারা এটুকু মনে রাখবেন, আমরা যে ফেলোশিপ দিচ্ছি বা অর্থ বরাদ্দ করেছি, এটা কিন্তু জনগণেরই অর্থ। কাজেই তা যেন জনগণের কল্যাণে লাগে। আমরা চাই, জনগণের কল্যাণেই যেন সে অর্থ কাজে লাগে, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে আপনারা গবেষণা চালিয়ে যাবেন।
দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করে দেশে এবং বিদেশেও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যাবে। আমরা সেদিকে লক্ষ্য রাখছি।বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, এ অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। আর করোনা ভাইরাস যখন পারে নাই, তখন আর কেউ পারবে না- এটাই আমার বিশ্বাস।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণা অনুদান তুলে দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ ফ ম রুহুল হক, মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আনোয়ার হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।