অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় শরণার্থীশিবিরে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে দুইবার বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই দুই দফা হামলায় শরণার্থীশিবিরটিতে হতাহতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গাজার প্রশাসনের প্রচার দপ্তর থেকে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
গাজা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য বলছে, দুই দফার ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৯৫ জন নিহত হয়েছেন। এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি ১২০ জনকে। তাঁরা বেঁচে আছেন না নিহত হয়েছেন সে বিষয়েও কোনো তথ্য জানা যায়নি। নিহত এবং নিখোঁজের বাইরেও ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৭৭ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
এদিকে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরুর পর গতকাল বুধবার প্রথমবারের মতো রাফাহ সীমান্ত খুলে দিয়েছে মিসর। এর পর থেকে বহু বিদেশি পাসপোর্টধারী গতকাল থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা ছাড়তে শুরু করেছে। রাফাহ সীমান্ত দিয়ে ঠিক কতজন লোক চলে যেতে সক্ষম হয়েছিল, তা পরিষ্কার নয়। তবে ঘটনাস্থলের লাইভ ফুটেজে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনি দিকের টার্মিনাল দিয়ে বিপুলসংখ্যক লোক ঢুকছে।
এর আগে মিসর থেকে ২০০ টির বেশি ট্রাক জরুরি ত্রাণ নিয়ে গাজায় প্রবেশ করে। তবে যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই অঞ্চলের কোনো লোককে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত শুধু বিদেশিদের জন্য ওই সীমান্ত খুলে দেওয়া হলো। গতকাল ওই সীমান্ত দিয়ে প্রায় ৫০০ জন বিদেশি ও দ্বৈত নাগরিকত্বধারী ব্যক্তির পার হওয়ার কথা ছিল। সেই সঙ্গে ৮৮ জন অসুস্থ ও আহত ব্যক্তিরও গতকাল গাজা ছাড়ার কথা ছিল। কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব বিদেশি পাসপোর্টধারীদের মধ্যে ৪৪ দেশের নাগরিক ছাড়াও জাতিসংঘসহ ২৮টি সংস্থার কর্মীরা রয়েছেন।
রয়টার্সকে একটি সূত্র জানায়, বিদেশি পাসপোর্টধারী ও মারাত্মকভাবে জখম ব্যক্তিদের গাজা ছেড়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে মিসর, ইসরায়েল ও হামাসের সঙ্গে চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছে কাতার। চুক্তিতে মিসর ও গাজা সীমান্তবর্তী রাফাহ দিয়ে বিদেশি পাসপোর্টধারী ও গুরুতর আহত ব্যক্তিদের উপত্যকাটি ছেড়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। সূত্র আরও জানায়, এই চুক্তিতে খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা-সামগ্রীর মারাত্মক সংকটে ভোগা গাজার মানবিক সংকট কমাতে যুদ্ধবিরতি কিংবা হামাসের হাতে জিম্মি থাকা বিদেশিসহ ইসরায়েলিদের বিষয়ে কোনো মধ্যস্থতা হয়নি।