1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ অপরাহ্ন

প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের সেই মায়া, তিন কন্যার দায়িত্ব নিল প্রশাসন

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ, ২০২১

বাংলাদেশ প্রতিদিনে সংবাদ প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রীর উপহার (জমি ও ঘরসহ নতুন নৌকা) পেতে যাচ্ছেন শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরা লক্ষ্মীপুরের সেই নৌকার মাঝি সংগ্রামী নারী মায়া বেগম। একই সঙ্গে তার তিন কন্যার উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন পূরণের দায়িত্বও নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ মায়ার হাতে নগদ ১০ হাজার টাকার চেক দিতে গিয়ে এসব তথ্য জানান। এ ধরণের অন্য কারো খোঁজ ফেলে তাদের পাশে দাঁড়ানোরও আশ্বাস দেন তিনি।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের তালহাটি গ্রামের ওয়াপদা খালে খেয়া পারাপার করে দিন যাপনসহ জীবন সংগ্রামে লড়ছেন মায়া বেগম। যাত্রীদের থেকে নেয়া টাকায় স্বামীর রেখে যাওয়া তিন কন্যা সন্তানকে নিয়ে ঢিমেতালে চলছিল তার সংসার। সম্প্রতি মায়ার সংগ্রামী জীবন নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয় বাংলাদেশ প্রতিদিনে।

তখন মায়া জানান, তিন মেয়েকে নিয়ে স্বামীর সংসারে ছিলেন মায়া। হঠাৎ করে প্রায় ৮-১০ বছর আগে সংসার চালানোর অক্ষমতায় তাদের ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যান তার স্বামী। পরিবারের আর কেউ উপার্জনক্ষম না থাকায় সমাজের সাথে আপোষহীনভাবে সংগ্রামী হয়ে উঠেন মায়া। এরপর জীবন-জীবিকার বাস্তবতায় হাতের ব্যাথায় মলম পড়ে রোজ, তবে মনের ক্ষত শুকায়না তার। স্থানীয় তালহাটি গ্রামে নিজেদের বাড়ীতে সন্তানদের নিয়ে মায়ের ঘরের পাশে খুপড়ি ঘরে বসবাস করেন তিনি। আর শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরতে বৈঠা হাতে নৌকার মাঝি হলেন জীবন যোদ্ধা নারী ।
সন্তানদের দু-বেলা দু-মুঠো ভাত যোগানো আর তাদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে একাই জীবনযুদ্ধে লড়ছেন তিনি। মায়ার বড় ও মেঝো মেয়ে এবার চাঁদখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং ছোট মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছেন। যে নৌকা দিয়ে তার সংসার চলে, সেটিও পুরানো হয়ে গেছে এখন। কোন সাহায্য মিলেনা বলে আক্ষেপ ছিল মায়ার।
ওই সময়ে তার তিন কন্যা সন্তান উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সরকারি চাকরি করে মায়ের কষ্ট লাঘব করতে মত প্রকাশ করেন। এলাকাবাসীও তাদের সহায়তা করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এমন প্রেক্ষাপটে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তখন তিনি সহায়তার আশ্বাস দেন। যা বাংলাদেশ প্রতিদিনে “তিন কন্যার স্বপ্ন পূরণে নৌকায় সংগ্রামী জীবন মায়ার” এ শিরোনামে প্রকাশিত হয়।
এরিমধ্যে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে সংবাদটির সত্যতা যাচাই করেন জেলা প্রশাসক। এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে মায়াকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারসহ (জমি ও ১লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যায়ে ঘর) তার পরিবারের দায়িত্ব নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তাকে ডেকে এনে ১০ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।
এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, ঝড় বৃষ্টির মধ্যেও যে নারী খেয়া পারাপার করে জীবিকা নির্বাহ করছে। সেটি উপলব্ধি করেই প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তাকে জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দেয়ার স্বিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার তিন কন্যার উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন পূরণের দায়িত্বও নেয়া হয়েছে। সরকারি এ সহায়তার মাধ্যমে তাদের দারিদ্র বিমোচনসহ তিন কন্যার উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় মায়া ও তার পরিবারের প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছে প্রশাসন।
এদিকে এমন খবরে মায়ার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বেশ খুশি ও আনন্দিত হওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। একই অনুভূতি প্রকাশ করেন তার বাবা নুরুল আমিন ও ইউপি মেম্বার আলমগীর হোসেন।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি