নিজ বাড়ি-ঘর ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অবরুদ্ধ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা ছেড়েছেন হাজারো ফিলিস্তিনি নাগরিক। এর মধ্যে উপত্যকাটির প্রাণকেন্দ্র গাজা সিটিকে ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে উপত্যকাটির শাসকগোষ্ঠী ও সশস্ত্র হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের তীব্র সংঘর্ষ চলছে। আর এই লড়াইয়ের মধ্যেই গাজা সিটি ছেড়ে দক্ষিণ দিকে চলে যাচ্ছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি।
স্থানীয় সময় বুধবার (৮ নভেম্বর) হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উত্তর গাজা থেকে পালিয়েছেন। স্থল ও আকাশ পথে ইসরায়েলের তীব্র অভিযানের কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ বিধ্বস্ত ছিটমহলটি ছেড়ে মাইলকে মাইল পথ পায়ে হেঁটে গাজা ছেড়েছেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর ঘোষিত একটি নিরাপদ করিডোর দিয়ে গাজা ছাড়েন তারা। গাজার নর্থ-সাউথ হাইওয়ে মধ্যে সালাহ এদ্দিন স্ট্রিট ধরে হাজারো নারী, শিশু, বয়স্ক এবং শারীরিকভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের স্রোত দেখা যায়।
এক কিশোরী এই বিপর্যয়কে ‘নাকবা’ গণআন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার সময় ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজ বসতি থেকে একইভাবে বিতাড়িত করা হয়েছিল টানা পঞ্চম দিনের মতো ইসরায়েলি বাহিনী এমন নিরাপদ করিডর খুলে রেখেছে। প্রতিদিনই গাজার দক্ষিণাঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা লোকের সংখ্যা বাড়ছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে রোববার অন্তত দুই হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে গাজা ছেড়েছে। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) তা বেড়ে হয়েছে ১৫ হাজার। ইসরায়েলি সরকার জানিয়েছে, বুধবার ৫০ হাজার গাজাবাসী এই করিডোর দিয়ে পার হয়েছেন। এই সংখ্যাটি যাচাই করা যায়নি, তবে ঘটনাস্থলে একজন সিএনএন সাংবাদিক জানিয়েছেন, বুধবারের সংখ্যাটি মঙ্গলবারের চেয়ে অনেক বেশি ছিল।
এদিকে, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যোদ্ধাদের হাতে আটক জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১০ থেকে ১৫ জনের মুক্তির বিনিময়ে গাজা যুদ্ধে হতে পারে তিনদিনের বিরতি। নাম গোপন রাখার শর্তে একাধিক সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ’১০ থেকে ১৫ জিম্মি মুক্তির বিষয়ে কাতারের মধ্যস্থতায় ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনা চলছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক বিল বার্নস সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। মুক্তির শর্ত পূরণ করলেই গাজায় এমন বিরতিতে রাজি হতে পারে ইসরায়েল, জানিয়েছে সূত্রটি।