বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি বলেছেন, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি‘র এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রুপান্তরিত করায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি অসামঞ্জস্যতা দূর হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর মালিবাগে পিডব্লিউডি স্টাফ কোয়ার্টার অডিটোরিয়ামে টিসিবির স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সারা দেশে বিনামূল্যে টিসিবির স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। কার্ড পেতে কার্ডধারীদের আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকতে হবে।
টিপু মুনশি আরও বলেন, শেখ হাসিনা গরিব-দুখী, অসহায় মানুষ, যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন তাদের কথা বিবেচনা করে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড অর্থাৎ ৫ কোটি মানুষকে কম মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশে যে পরিমাণ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে তার চেয়েও বেশি মানুষকে সরকার ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় করছে।
ডিম ও আলু আমদানি শুরু হওয়ায় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ডিমের একটি চালান দেশে আসার পর সরকার থেকে যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তার চেয়ে কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। আগামী মাসের মাঝামাঝি আলু-পেঁয়াজসহ অন্যান্য শাক-সবজির বাজার স্বাভাবিক হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম নির্ভর করে দেশের উৎপাদনের ওপর। এখন পেঁয়াজের শেষ সময়। আমরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে ঘাটতি পূরণ করে থাকি। কিন্তু ভারত রফতানি নিরুৎসাহিত করতে প্রথমে ৪০ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করে। এর কিছুদিন পরই প্রতি ম্যাট্রিক টন পেঁয়াজের রফতানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে। যাতে করে আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে বাজারে দাম বেশি।’
ডিম আমদানির অনুমতি দেয়ার পরও চালান আসতে দেরি হওয়ার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘ডিম আমদানির ক্ষেত্রে আমরা বেশ কয়কটি শর্ত দিয়েছিলাম বিশেষ করে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা সনদ নিতে হবে। এসব শর্ত পূরণে কিছু আইনি জটিলতা থাকায় দেশে চালান আসতে দেরি হয়েছে।’
টিপু মুনশি জানান, ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ নিচ্ছে এবং মানুষ কষ্ট পাচ্ছে এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ দেশের মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে হবে এবং আমরা সে চেষ্টাই করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ে ভীষণ দুঃসময় পার করতে হচ্ছে। এরমধ্যেই বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে অসাধু চক্র। রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে দেশে বেড়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। এ মাসে সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। সেপ্টেম্বর মাসে যেটি ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর গত বছরের এই সময়ে যা ছিল ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ ছাড়া অক্টোবরে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ হয়েছে, সেপ্টেম্বরে যেটি ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান প্রমুখ।