1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন

‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ আমাদের দেশকে জানার ইতিহাস : প্রধানমন্ত্রী

রিপোর্টার
  • আপডেট : শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৩

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ঘিরে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর এই ভাস্কর্যটি নিছক একটি ভাস্কর্য নয়। এটি দেশকে জানার একটি ইতিহাস।
আজ শুক্রবার সকালে নগরীর বিজয় স্মরণীতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার এই ভাস্কর্যটি নিছক একটি ভাস্কর্য নয়। এটি একটি ইতিহাস। এটি আমাদের দেশকে জানার ইতিহাস।’
শৈশবের স্মৃতিচারণা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছোটবেলায় শিশুরা তোমরা বাবা মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাও, আমাদের সেই সৌভাগ্য হয়নি। বাবার সঙ্গে দেখা হতো কারাগারে। মাসে দুইবার জেলগেটে যেতে পারতাম। স্কুল থেকে জেলগেটে গিয়েছি, কলেজ থেকে জেলগেটে গিয়েছি। এই ছিল আমাদের জীবন।

তিনি বলেন, তবে আমাদের কোনো ক্ষোভ ছিল না, আমরা জানি আমাদের বাবা সংগ্রাম করছেন দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। স্বাধীনতার পর থেকে তিনি সে প্রচেষ্টাই চালিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি জাতি যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছি। এ বাংলাদেশ একসময় আজকের বাংলাদেশ ছিল না। এমনকি ১৫ বছর আগের বাংলাদেশেও এখনকার বাংলাদেশ নয়। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব, চিকিৎসাহীনতা, গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের ক্রন্দনে বাংলার আকাশ-বাতাস ভারী ছিল। এই বাঙালি জাতিকে আত্মসম্মানে মুক্তি দেওয়ার জন্যই জাতির পিতার সংগ্রাম। জাতির পিতা নিজের জীবনটা উৎসর্গ করেছিল এ দেশের মানুষের জন্য।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে প্রায় ১৫ বছর হয়ে গেল, এর মধ্যে বাংলাদেশকে একটা বদলে যাওয়া বাংলাদেশে রূপান্তর করতে পেরেছি। আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশে আমাদের ওয়াইফাই কানেকশন আছে। আমরা স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শিক্ষা দিচ্ছি। অনেক আধুনিক প্রযুক্তির স্থাপনা করে আজকের দেশে মানুষকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানসম্পন্ন জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছি। আজকের শিশুরা হবে আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রেখেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের প্রত্যয় নিতে হবে, আজকের বাংলাদেশ যতদূর উন্নত-সমৃদ্ধ হয়েছে, আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, এটা ধরে রেখে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাই সবচেয়ে বড় সম্পদ। শিক্ষার মধ্য দিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে শিশুরা দেশকে আরও উন্নত সমৃদ্ধ করা যাবে। আজকের শিশুরা আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক, যারা স্মার্ট বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে এবং বাংলাদেশ পরিচালনা করবে। সেভাবেই তোমরা নিজেদের তৈরি করবে।
এ সময় শিক্ষা অর্জনে শিক্ষার্থীদের মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে, শিক্ষাই জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, কোনো কিছুই সম্পদ না। সম্পদ হচ্ছে একমাত্র শিক্ষা। শিক্ষা যে গ্রহণ করবে ভালো ভাবে, এটি কেড়েও নিতে পারবে না, ডাকাতিও করতে পারবে না। এটি নিজের কাছে থেকে যাবে। আর শিক্ষা থাকলে পরে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করা যাবে।
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে মায়ের ভাষা বাংলার ভাষার অধিকার যখন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। তখন থেকে তিনি তার প্রতিবাদ করেন এবং আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেখানে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। মাতৃভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার সংগ্রাম শুরু হয়। সেই সংগ্রামের পথ বেয়েই কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা অর্জন।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামসহ সামরিক-বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণির স্কুল শিক্ষার্থী।

এর আগে বিজয় সরণিতে জাতির পিতার ভাস্কর্য সম্বলিত মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই মৃত্যুঞ্জয় প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘মৃত্যুঞ্জয়’ নামে একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে, যা ২০২১ ও ২০২২ সালের বিজয় দিবসের প্যারেডে প্রদর্শিত হয়েছিল। এই চত্বরের কেন্দ্রস্থলে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে দেয়ালে ম্যুরালও স্থান পেয়েছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মিত এই চত্বরের সাতটি দেয়ালে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে অন্যান্য আন্দোলন ও বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতার নেতৃত্ব ও অবদান চিত্রিত করা হয়েছে।
উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ পরিদর্শন করেন এবং পরে সেখানে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রী এবং সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি