শাহীন আলম বিশেষ প্রতিনিধিঃ
নভেম্বর, ২০২৩ মাসের ১৩ তারিখ বেলা ১:৩০ ঘটিকা রৌদ্রোজ্জল সময় মোসাঃ আফরোজা পারভীন আঁখি (২৯) গোসল সেরে ঘরের বারান্দায় উঠছিলেন এমন সময় জেলা ব্যবস্থাপক জনাব আবু হানিফ মোড়ল ও প্রোগ্রাম অফিসার জনাব সবিত শিকদার, খোকসা এর সাথে আমি ব্র্যাক জেলা সমন্বয়ক তাদের বাড়ীর উঠানে গিয়ে উপস্থিত হলাম। আমাদের দেখে কিছুটা হতচকিত হলেও ব্র্যাকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
করে আমাদেরকে বসার জায়গা দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। তখন ঘরের বারান্দায় তার বাবা ও মা বসেছিলেন। আঁখির পিতার নাম মোঃ আফিল উদ্দিন বিশ্বাস, ঠিকানাঃ গ্রাম- মির্জাপুর
(পাইকপাড়া), খোকসা, কুষ্টিয়া। আঁখি খাতুন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে বি,এ পাশ করে সাভারে
সিম্পনী মোবাইল কোম্পানীতে চাকুরী করতেন। চাকুরীকালীন সময়ে তিনি তার পেটের উপরিভাগে
ব্যাথা অনুভব করতে শুরু করেন। তখন তিনি সাভার এনাম মেডিকেলে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ সেবন করেও সুস্থতা অনুভব না করার কারনে বাড়ীতে চলে আসেন এবং কুষ্টিয়াতে ০১ মাস যাবৎ একজন ডাক্তার এর আওতায় চিকিৎসা গ্রহণ করেন করেন। কিন্তু সুস্থ হতে পারেননি। এরপর তিনি আত্মীয় স্বজনদের পরামর্শে রাজশাহীতে গিয়ে একজন ডাক্তার দেখান। ডাক্তার মহোদয় তার পূর্বের ইতিহাস সমূহ
পর্যালোচনা করে কিছু টেষ্ট করতে বলেন এবং টেষ্ট এর রেজাল্ট দেখে বলেন যে, আপনার টিবি রোগ হয়েছে, আপনি আপনার বাড়ীর কাছে ব্র্যাক অফিসে যোগাযোগ করেন। তখন আঁখি খাতুন ও তার আত্মীয় স্বজন বেশ কিছুটা চিন্তায় পড়ে
গেলেন যে, এত জায়গায় এত ভালো ভালো ডাক্তার দেখিয়ে সুস্থতা পেল না আর ব্র্যাক এ গিয়ে কি চিকিৎসা দেবে যে, সুস্থ হবে। এতদিনে
আঁখি খাতুন তার চাকুরীটাও ছেড়ে দিয়ে বাড়ীতেই থাকেন। তাদের বাড়ীর পাশেই তখন ব্র্যাকের টিবি কর্মসূচির একজন প্রোগ্রাম অর্গানাইজার মোঃ আলমগীর হোসেন ভাড়া থাকতেন। আাঁখি খাতুন এর সাথে তার কথা হয় এবং তিনি তাকে অফিসে যেতে বলেন। তিনি নভেম্বর,২০২২ মাসে খোকসা ব্র্যাক অফিসে যান। সেখানে টিবি
কর্মসূচির কর্মী ভাই-বোনেরা আাঁখি খাতুনকে রোগটির চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝিয়ে বলার পর আঁখি খাতুন যেন স্বস্তির
নিঃশ্বাস ফেললেন এবং মনের মধ্যে অসীম সাহস পেলেন। পরবর্তীতে তার বাড়ীর এলাকায় কর্মরত ব্র্যাকের স্বাস্থ্য সেবিকা রেহেনা বেগম এর বাড়ী
যেয়ে ০৭/১২/২০২২ তারিখ হতে প্রতিদিন সকালে ওষুধ খেয়ে আসতে শুরু করেন এবং ২৯/০৫/২০২৩ তারিখ পর্যন্ত দীর্ঘ ০৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত ওষুধ খেয়ে পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান। আাঁখি খাতুন বললেন ” আমি তো সুস্থতার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম কিন্তু ব্র্যকের স্বাস্থ্য সেবিকা আপার কাছ থেকে ওষুধ খেয়ে আজ আমি সুস্থ এবং মানুষের মত বাঁচতে শুরু করেছি, টিবি রোগ হয়েছে শুনে অনেকেই আমার কাছে
আসতে চায়নি , অনেকে কথা বলতে চায়নি। কিন্তু ব্র্যকের কর্মীগন আমাকে কখনও অবহেলা করেনি। আমি ব্র্যাকের প্রতি কৃতজ্ঞ এবং ব্র্যাকের সাফল্য কামনা করি।”