বহু বছর ধরে দেশের রপ্তানি আয় এবং কর্মসংস্থানে নেতৃত্ব দিচ্ছে পোশাক শিল্প খাত। এ খাতে পণ্য বৈচিত্র্য না বাড়লে সস্তা আর সুতি কাপড়ের পোশাক রপ্তানি করেই বিশ্ববাজারে এখনো দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ।
তবে বাজারে দ্রুত চাহিদা বাড়তে থাকা সিনথেটিক বা কৃত্রিম সুতার পোশাকে পিছিয়ে দেশের উদ্যোক্তারা। রপ্তানির সিংহভাগ জুড়েই সুতি কাপড়ের টি শার্ট, শার্ট, ট্রাউজার, জার্সি বা পুলওভার। যদিও টেকসই ও ফ্যাশনেবল হিসেবে বিশ্ববাজারে বাড়ছে সিনথেটিক ও পলিয়েস্টারের মত কৃত্রিম সুতার পোশাকের চাহিদা।
আন্তর্জাতিক বাজার গবেষণা সংস্থার তথ্যমতে, গত দশ বছরে তুলার সূতার চাহিদা কমেছে।
এদিকে ফাইবার টু ফ্যাশন ম্যাগাজিনের তথ্য বলছে, গত দশ বছরে ননকটন বা সিনথেটিক সুতার চাহিদা ৭০ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ। যার বিপরীতে কমেছে তুলা থেকে তৈরি সুতার চাহিদা। কৃত্রিম সূতার পোশাকের বিশ্ববাজারের আকার প্রায় ১৫ হাজার কোটি ডলারের। যেখানে বাংলাদেশের দখল মাত্র ২ শতাংশের মত।
গেল বছরে বাংলাদেশ থেকে এ ধরনের পোশাক রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার। যদিও সামগ্রিকভাবে পোশাকে বাংলাদেশ ৬.৮ শতাংশ শেয়ার নিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয়।
উদ্যোক্তারা বলছেন, উচ্চ মূল্যের পোশাক রপ্তানি বাড়াতে নিতে হবে সমন্বিত পদক্ষেপ।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, একটা সুতি টি শার্টের চেয়ে তিনগুণ দামে সিনথেটিক কাপড়ের টি শার্ট বিক্রি করা যায়। যা তৈরিতে একই সময় লাগে। তবে এ ধরনের কারখানা স্থাপনে সাধারণ পোশাক কারখানার কয়েকগুণ বেশি বিনিয়োগ দরকার হয়। উন্নত প্রযুক্তির মেশিনারিজ আমদানির বিষয় আছে।
এদিকে পোশাক রপ্তানি বাড়াতে স্থানীয় কাঁচামাল ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জকে তুলে ধরছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদরা জানান, সিনথেটিক পোশাকের ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ আনার চেষ্টা করা যেতে পারে। চীন, জাপানসহ কয়েকটি দেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য যেসব ইকোনমিক জোন বা অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হচ্ছে সেখানে তাদের এ ধরনের শিল্পে উৎসাহিত করা যায়। যখন দেশের উদ্যোক্তারা দেখবে বিদেশিরা এখানে ভালো করছে, তখন তারাও আরো উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে আসবে। তারা আসলে রোল মডেল চায় যেকোন খাতে।