কাজের সন্ধানে (দুবাই) বিদেশে পাড়ি দেওয়া আলমগীর হোসেন। এ দেশের সহজ সরল বেকার যুবকদের বিদেশ নেয়ার নামে প্রতারনার করে হাতিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।দেশে ফিরে চেয়ারম্যান নির্বাচন করতে দলিয় নমিনেশনের জন্য ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতা কর্মিদের সাথে প্রতারনা । এরই মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে টাকা দিয়ে বিদেশে না যেতে পেরে ও টাকা ফেরত না পেয়ে অবশেষে মামলা করেন দশমিনা উপজেলার মোঃ করিম মাতব্বর।
ঝালকাঠির নলছিটি ভৈরবপাশা ইউনিয়নের প্রতাপ গ্রামের মরহুম মোঃ রফিজ উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে দুবাই প্রবাসী মোঃ আলমগীর হোসেন ওরফে দুবাই আলমগীর। কাজের সন্ধানে দুবাইতে পাড়ি জমান। তার কিছুদিন পর থেকেই তিনি দেশ থেকে বেকার যুবকদের নিয়ে কাজ দেওয়ার কথা বলে প্রতারনার করে অনেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়ন চাঁদপুর গ্রাম ১২ নং ওয়ার্ডের আমিনুল মাতব্বরের ছেলে মোঃ করিম মাতব্বর পরে কোন উপায় না পেয়ে চলতি বছের ২ ফেবরুয়ারী প্রতারক দুবাই আলমগীর এর বিরুদ্ধে দশমিনা জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় মামলা করেন। মামলা নং- সি. আর-৪৯/২০২১, বিজ্ঞ আদালত (the code of criminal procedure) ভূক্তভোগী ২০০ ধারায় জবানবন্দি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওনা জারি করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মোহাম্মদ করিম মাতবরকে দুবাইতে নেওয়ার কথা বলে তিনটি ধাপে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নগদ পাচঁ লক্ষ টাকা নেন আলমগীর।টাকা নেয়ার পর থেকে করিম মাতব্বরের ভিসার পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই আলমগীর ঘুরাতে থাকে। গত ১৪ই জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় দশমিনা বাজারে প্রতারক দুবাই আলমগীর পেয়ে যায় ভুক্তভোগী করিম । স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে বিষয়টি জানাজানি হলে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন দুবাই আলমগীর।
এভাবেই বিদেশে নেওয়ার কথা বলে এদেশের সরল সোজা মানুষের কষ্টার্জিত লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি এমন অভিযোগ রয়েছে অনেকের।
এর আগে ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ সালে দুবাই আলমগীরের নিজ গ্রাম নলছিটির প্রতাপ বাবুল মৃধার ছেলে মোঃ রবিউল মৃধা অভিযোগ করেন। ২০১১ সালের ২৩ শে সেপ্টেম্বর দুবাই আলমগীর তাকে দুবাইতে নিয়ে যান। নেওয়ার আগে তাকে বলেছেন যে কোম্পানিতে কাজ করে রবিউল মাসে ২১ হাজার টাকা বেতন পাবেন এ বলে থাকে বিদেশে নেন। দুবাইতে নেওয়ার পরে চাকরির ব্যবস্থা না করিয়া উপরোক্ত তাহার কোন খোঁজ খবরই রাখেন না বলে জানান। রবিউল প্রবাস জীবনে মানবেতর জীবন যাপন করেন। পরে ২০১৪ সালের ৬ নভেম্বর তারিখ পর্যন্ত রবিউল দুবাই নিজ চেষ্টায় অবস্থান করতে সক্ষম হলেও একপর্যাযয়ে অসুস্থ হয়ে পরেন রবিউল। পরে দেশ থেকে তার পিতা-মাতা শেষ সম্বল বসতভিটা বিক্রি করিয়া রবিউলকে দেশে ফিরিয়ে আনেন।
দুবাই আলমগীর তাকে বিদেশে নেওযয়ার যে প্রতিশ্রতি দিয়েছিলেন তার কোনোটাই পূরণ না করায় রবিউল দেশে এসে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে দুবাই আলমগীর এর কাছে টাকা ফেরত চান ক্ষতিপূরণসহ। কিন্তু দুবারই আলমগীর সকল বিষয়টিকে অস্বীকার করেন। রবিউলকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেন আলমগীর।
রবিউল বলেন দুবাই আলমগীর একজন আদম ব্যবসায়ী। মিথ্যা আশ্বাসে মোটা বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে গ্রামের মানুষের নিকট হইতে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশ পাঠিয়ে তাদের সর্বস্ব আত্মসাৎ করিয়া সম্পদের পাহাড় গড়াই তার নেশা ও পেশা। রবিউল এ ব্যাপারে দুবাই আলমগীরের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে মামলাটি আমলে নেয়নি আদালত। স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করতে চাইলেও এখন পর্যন্ত দুবাই আলমগীরের কাছ থেকে তার পাওনা টাকা ফেরত পায়নি।
ভৈরব পাশা ইউনিয়ন আওয়ামীলগের সাধারন সম্পাদক মোস্তফা কামাল ব্যাপারি জানান, বাসের হেলপার থেকে দুবাই তে গিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক আলমগীর কোন পরোয়া করেন না কারো কোন কথা শুনেনা। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই দুবাই আলমগীর এর ব্যাপারে সঠিক তদন্ত করে অসহায় মানুষের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করার।
তিনি আরো বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গৌরনদী, কুমিল্লা, পটুয়াখালী সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক মানুষ তার প্রতারিত হয়ে টাকা ফেরত চেয়ে আমাদের কাছে এসেছিল। কিন্তু দুবাই আলমগীরকে বললে তিনি একথা কোন তোয়াক্কা করেন না।
দুবাই আলমগীর জামাত-বিএনপির লোক হয়েও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয় এবং আমির হোসেন আমু ছবি সম্বলিত পোস্টার টানিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ।
তিনি আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশি হইয়া প্রচার-প্রচারনা চালাইয়া আসিতেছে। বিষয়টি আওয়ামীলীগের নজরে আসিলে আওয়ামীলীগ সহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সাধারন জনগনের মধ্যে যথেষ্ট ক্ষোভে ও উত্তেজনার সঞ্চার হইয়াছে। ভাবষ্যতে যে কোন সময় অনাকাক্ষিত ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রহিয়াছে। নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগের নমিনেশন নেওয়ার চেষ্টা করেন
ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক জিডিও করেছেন নেতাকর্মীরা ও ভৈরবপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ ফিরোজ আহমেদ।
এ ব্যপারে জানার জন্য মোঃ আলমগীর হোসেনের মোবাইল ০১৯৪৫৪৪৪১১১ নম্বোরে বার বার কল দিলেও তিনি ধরেননি।