সাধারণ নাগরিকদের যুদ্ধে পাঠাতে আইন কঠোর করছে ইউক্রেন। নতুন আইনে দেশের সব তরুণদের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা; বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করাসহ রয়েছে বিতর্কিত নানা বিষয়। যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ এ খবর জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই নানাভাবে সাধারণ নাগরিকদের এতে অংশ নিতে উৎসাহিত করছে ইউক্রেন। অভিযোগ আছে কৌশলে চাপে ফেলে বাধ্য করা হচ্ছে যুদ্ধে অংশগ্রহণে। এমন পরিস্থিতে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন অনেকে। তাই যুদ্ধের ময়দানে নাগরিকদের অবস্থান নিশ্চিতে সেনা মোতায়েন আইন আরও কঠোর করছে দেশটির সরকার। গেলো ডিসেম্বর অনলাইনে প্রকাশিত হয় আইনটির খসড়া।
আইনে সেনা নিয়োগের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ থেকে ২৭ বছর। এই বয়সের তরুণদের বিদেশ ভ্রমণও নিষিদ্ধের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সামরিক প্রশিক্ষণ। পাসপোর্টসহ যেকোনো কনস্যুলার সেবা পেতে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মিলিটারি রেজিস্ট্রেশনের নথি প্রদর্শন। যা নিয়ে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ।
এমনকি হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে, এই আইন ভাঙলে বা মেনে চলতে অনীহা দেখালে পেতে হবে কঠোর শাস্তি। বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে ব্যক্তির সম্পত্তি, দেয়া হবে না লাইসেন্স, গাড়ি ব্যবহারের অনুমতি। যেতে দেয়া হবে না বিদেশে। হতে পারে তিন থেকে পাঁচ বছরের জেল। এমনকি বঞ্চিত হতে পারেন সব নাগরিক সুবিধা থেকেও।
তবে এই আইনে উল্লেখ আছে পুরোনো সেনাদের অব্যাহতি পাওয়ার বিষয়টিও। বলা হয়েছে, টানা ৩৬ মাস বা তার বেশি সময় ধরে যারা যুদ্ধ করছেন ছাড় পাবেন তারা।
ইউক্রেনের প্রসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, প্রত্যেক যোদ্ধা ও তার পরিবারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। কঠোর পরিশ্রম আর আত্মত্যাগের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে চাই তাদের প্রতি। জয় নিশ্চিত করতে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাই তরুনদের প্রতি।
এই আইন প্রণয়ণে আগামী বছর জানুয়ারির মাঝামাঝি ভোট হবে সংসদে। চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে নতুন করে যুদ্ধে পাঠানো হবে প্রায় ৫০ লাখ সেনা।