আজ আইন মন্ত্রণালয় বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। তৃতীয়বারে মতো তার ৬ মাসের জন্য জামিন বৃদ্ধির সুপারিশ করে সেই প্রস্তাবনাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। জামিনের মেয়াদবৃদ্ধি সংক্রান্ত্র যে সুপারিশ করা হয়েছে সেখানে পূর্বের শর্তই বহাল রাখা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে যে বিধিনিষেধ সেই বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকবে। ফলে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি পেলেও তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
এই বিষয়টি নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য বলেছেন, বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক এবং তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া প্রয়োজন। এ কারণেই এবারের আবেদনে আমরা তার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম। কিন্তু সরকার এ বিষয়টি সদয় বিবেচনা করেনি। বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করা হয়েছিলো কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৭ মার্চ পর্যন্ত প্রচন্ড ব্যস্ত থাকায় এবং বিদেশি সরকারের রাষ্ট্রপ্রধানরা আসছেন, মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান এসব নানা বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আপাতত সময় দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেই জানানো হয়েছে। যার ফলে বেগম জিয়ার পরিবার খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারে নি।
একাধিক সূত্র বলছে যে, এই খবরটি জানার পর বেগম খালেদা জিয়া হতাশা প্রকাশ করেছেন। এই জামিনে তার কি লাভ হবে সেরকম প্রশ্নও তুলেছেন। তবে বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা এখনো আশা ছাড়েন নি। তারা মনে করছেন যে, জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির পর খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য আবার যদি নতুন করে আবেদন করতে হয় সেটাও তারা করবেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ততা শেষ হয়ে গেলে তার সঙ্গে তারা কথা বলতে চান।
বেগম জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার সে সমস্ত অসুস্থতা, তার অনেকগুলোরই চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এই জন্যই তারা বিদেশ নিতে চাইছেন। এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার বিষয়টি নিয়ে নমনীয় মনোভাব দেখালেও বিএনপি খালেদা জিয়ার বিদেশ যেতে না দেয়ার বিষয়টি একটি নতুন ইস্যু করতে চেয়েছে। এমনিতেই জিয়ার বীর উত্তম খেতাব বাতিল নিয়ে মাঠ গরম করতে চাইছে বিএনপি। পাশাপাশি তারা ইউপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। এখন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছে না এই ইস্যুটি নিয়ে বিএনপি মাঠ গরম করতে চাইছে এবং এ ব্যাপারে বিএনপি কর্মসূচি দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে বলেও জানা গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে বিএনপির অবশ্যই কর্মসূচি করা উচিৎ। তবে বিএনপি কবে, কিভাবে, কি কর্মসূচি দেবে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়।
সূত্র : বাংলা ইনসাইডার