ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের হামলার পর গত দুই মাসে সুয়েজ খালের মধ্য দিয়ে যাওয়া বাণিজ্যিক জাহাজের সংখ্যা ৪০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য এতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘ এ কথা বলেছে।
ইরান-সমর্থিত হুথিরা বলেছে, তারা গাজায় ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে এই অঞ্চলে ইসরায়েল-সংযুক্ত বাণিজ্যিক এবং সামরিক জাহাজগুলোকে হামলার টার্গেট করেছে। হামলা এড়াতে পণ্যবাহী জাহাজগুলোকে ব্যয়বহুল ও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলন (আঙ্কটাড) প্রধান জ্যান হফম্যান বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘লোহিত সাগরে শিপিংয়ে হামলা বিশ্ব বাণিজ্যে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে, ভূ-রাজনীতি এবং বিদ্যমান জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাণিজ্য বিঘিœত হচ্ছে, এতে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন’।
আঙ্কটাড বলেছে, জাহাজগুলো লোহিত সাগরের পরিবর্তে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ অফ গুড হোপের চারপাশ ঘুরে যাওয়ায় গত দুই মাসে সুয়েজ খালের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট ৪২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
মিশরের সুয়েজ খাল ভূমধ্যসাগরকে লোহিত সাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে।
হফম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক পণ্য বাণিজ্যের ৮০ শতাংশেরও বেশি পরিমাণ সমুদ্র পথে হয়।
তিনি বলেন, ‘সমুদ্র পরিবহন সত্যিই বিশ্ব বাণিজ্যের লাইফলাইন’।
আঙ্কটাড বলেছে, সুয়েজ খাল দিয়ে সাপ্তাহিক কন্টেইনার জাহাজ চলাচলের সংখ্যা বছরে ৬৭ শতাংশ কমেছে। বিশ্বের কন্টেইনার বাণিজ্যের ২০ শতাংশেরও বেশি সুয়েজ খাল দিয়ে যায়।
হফম্যান বলেন, ‘বৃহত্তর কন্টেইনার জাহাজগুলো সুয়েজ খাল থেকে সরে যাওয়ায় কন্টেইনার বহন ক্ষমতা বিপুল পরিমানে কমে গেছে।’
ট্যাঙ্কার চলাচল ১৮ শতাংশ কমেছে, শস্য ও কয়লা বহনকারী বাল্ক কার্গো জাহাজের ট্রানজিট ৬ শতাংশ কমেছে এবং গ্যাস পরিবহন স্থবির হয়ে পড়েছে।
সামগ্রিকভাবে, বিশ্ব বাণিজ্যের ১২ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে প্রতি বছর ২০ হাজার জাহাজ লোহিত সাগর দিয়ে যায়। যা ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্যে সংযোগ প্রদান করে।
পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে, অন্যান্য বৈশ্বিক সামুদ্রিক বাণিজ্য রুটগুলোও বাধার সম্মুখীন হয়েছে। দুই বছর আগে রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পর থেকে কৃষ্ণ সাগরের মাধ্যমে ট্রানজিট মারাত্মকভাবে সীমাবদ্ধ ছিল, যাতে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম বেড়েছে।