১৯৭২ সালে রতন কাহারের গান প্রথম রেডিওতে সম্প্রচারিত হয়। তারপর থেকে এ পর্যন্ত মোট ২৫০টিরও বেশি গান উনি তৈরি করেছেন।
পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দেবার জন্য লিখছি ‘বড়লোকের বিটি লো’-র স্রষ্টা রতন কাহার।
২০২০ সালে গায়ক, র্যাপার বাদশার ‘গেন্দা ফুল’ গানটি নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়। ওই গানের মধ্যে বাংলা লোকসঙ্গীত ‘বড়লোকের বিটি লো’ গানের একটি অংশটি যোগ করা নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠে। বিতর্কের কারণ ওই গান ব্যবহার করা নয়, গানের আসল স্রষ্টাকে স্বীকৃতি না দেওয়া।
গানটির লেখক ও সুরকার বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দা রতন কাহার। পশ্চিমবঙ্গের অনেকেই বাদশাকে প্রকৃত তথ্য জানাতে তিনি সঙ্গে সঙ্গে মূল শিল্পীকে স্বীকৃতি দেন। প্রকাশ্যে নিজের ভুল স্বীকার করেন এবং ৫ লক্ষ টাকাও দেন রতন কাহারকে।
১৯৭২ সালে রতন কাহারের গান প্রথম রেডিওতে সম্প্রচারিত হয়। তারপর থেকে এ পর্যন্ত মোট ২৫০টিরও বেশি গান উনি তৈরি করেছেন। মূলত উনি ভাদুগানের শিল্পী। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ‘বড়লোকের বিটি লো। উনি বলেন, ‘আমি খুব খুশি যে আমাকে এত বড় একটা পুরস্কারে সম্মানিত করা হচ্ছে। আমার শরীর একেবারেই ভালো না। তবুও আমি এই পুরষ্কার গ্রহণ করতে যাব।’
নিজের অভিমানের কথা জানিয়ে শিল্পী বলেন, ‘যতদূর মনে পড়ে ‘বড়লোকের বিটি লো’ গানটি আমি প্রসার ভারতীতে গেয়েছিলাম। পরে আমি গানটি আনন গোষ্ঠীর রাজকুমার সাহাকে দিয়েছিলাম। ওঁরা সমবেতভাবে গানটি গাইতেন, সেখান থেকেই গানটি ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্বপ্না চক্রবর্তী আমার খাতা থেকে গানটি লিখে নিয়ে যান, ১৯৭৬ সালে তিনি গানটি রেকর্ডও করেন। তবে সেখানেও আমার লেখা ও সুরের কথা স্বীকার করা হয়নি। কোনও কৃতিত্ব দেওয়া হয়নি। অনেকেই আমার লেখা ও সুর করা গান নিয়ে নিজের নামে চালিয়েছেন। আমি গরিব, অসহায়। লোকে বেইমানি করলে আমি কী করব! আমরা মাটির গান লিখি, যদিও অনেকেই আমাদের সম্মান দেন না।
এত বছর পর ওনার প্রতিভার কদর দিচ্ছে ভারত সরকার, তাতে খুশি শিল্পী।