টঙ্গীর তুরাগ তীরে আখেরি মোনাজাতেরে মধ্য দিয়ে শেষ হল বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে এই আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মারকাজের তাবলিগ জামায়াতের শুরা সদস্য মাওলানা মো. জোবায়ের হাসান। আরবি, উর্দু ও বাংলা মিলিয়ে তিনি ২২ মিনিটে মোনাজাত শেষ করেন। এতে অংশ নেনে লাখ লাখ মুসল্লি।
এর আগে শেষ দিনে ফজরের পর থেকেই বয়ান আর জিকিরে মুখর ছিল ইজতেমা ময়দান। এদিন ফজরের নামাজের পর হেদায়েতের বয়ান করছেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। এরপর নসিহতমূলক কথা বলেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।
মানুষের আগমনে বন্ধ হয়ে যায় ময়দানের প্রতিটি প্রবেশ পথ, অলিগলি আর তাবুর মাঝের ফাঁকা জায়গা। লাখো মানুষের আল্লাহু আকবার ধ্বনি, গুঞ্জন আর কোলাহলে চুরমার হয়ে যায় নিরবতা। শীতের সকালেও তুরাগতীরে উষ্ণতা ছড়ায় লক্ষাধিক মুসল্লিদের এই জমায়েত। সবারই এক উদ্দেশ্য- আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ।
ভিড়ের মাঝে সাথের মানুষকে খুঁজে পেতেও বেগ পেতে হয় অনেককে। তবে এত ভিড়েও কারও অভিযোগ নেই, বরং আছে অসামান্য ধৈর্য্য আর প্রাপ্তির আনন্দ।
ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসের পূর্বপাশে বিশেষভাবে স্থাপিত মোনাজাত মঞ্চ থেকে এ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। রোববার ফজরের নামাজের পর থেকেই শুরু হয় হেদায়েতি বয়ান। হেদায়েতি বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। এরপর কিছু সময় নসিহতমূলক কথা বলেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার ভোর থেকেই মুসল্লিদের ঢল ছুটেছে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে। আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে জানান, আখেরি মোনাজাতের পর মুসল্লিদের বাড়ি ফেরা পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় প্রায় সাত হাজার পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া সাদা পোশাকে মুসল্লিদের বেশে খিত্তায় খিত্তায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মুসল্লিরা যাতে খুব দ্রুত এবং নিরাপদে ময়দান ত্যাগ করতে পারেন সেজন্য বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহনের ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইজতেমায় যোগ দিতে তিন দিন আগ থেকেই টঙ্গীতে আসতে শুরু করেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসল্লিরা। বেশিরভাগ মুসল্লি চলে আসায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই বয়ান শুরু করে ইজতেমা আয়োজকেরা। যদিও সেদিন রাতে বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় মুসল্লিদের।
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম পর্বের নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। ৪ ফেব্রুয়ারি এ পর্ব শেষ হবে। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা হবে ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি। ওই পর্বের নেতৃত্ব দেবেন ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা।