পাকিস্তানের নির্বাচনে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) জানিয়েছে, অপর দুই দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) বা পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) কিংবা অন্য কোনো দলের সঙ্গে জোট করার কোনো পরিকল্পনা নেই দলটির।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহর খান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে ফলাফল এসেছে, তাতে এটা স্পষ্ট যে পিটিআই এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে। তাছাড়া পাঞ্জাবের প্রাদেশিক আইনসভায় আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু এককভাবে সরকার গঠনের সুযোগ আমাদের রয়েছে, তাই জোট গঠনের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। পিএমএলএন অথবা পিপিপির সঙ্গে কোনো যোগাযোগও আমাদের হয়নি।’
পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নির্বাচন হয়েছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার। অ্যাসেম্বলির মোট আসনসংখ্যা ২৬৬টি। এসব আসনের মধ্যে একটি ব্যতীত বাকি সবগুলোতে নির্বাচনী ভোটগ্রহণ হয়েছে বৃহস্পতিবার।
রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২৪৫টি আসনের ফলাফল জানা গেছে। সেখানে দেখা গেছে, ৯৮টি আসনে জয়ী হয়েছেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই), ৬৯টি আসন পেয়েছে নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫১টি আসন।
গতকাল শুক্রবার রাতে লাহোরে নিজ বাসবভবনের সামনে জড়ো হওয়া কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে পিএমএলএনকে বিজয়ী বলে দাবি করেন নওয়াজ শরিফ। তিনি আরও জানান, অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে জোট সরকার করতে চায় পিএমএলএন।
পিএমএলএনের জ্যেষ্ঠ নেতা ও পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী ইসাক দার জানিয়েছেন, অনেক ‘পিটিআই-স্বতন্ত্র’ বিজয়ী প্রার্থী ইতোমধ্যে পিএমএলএনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের সংবিধান অনুসারে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী যদি নির্বাচনে জয়ী হন, তাহলে ফলাফল প্রকাশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাকে কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে হয়।
তবে পিটিআই-স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়টি ভিন্ন। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন এবং উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে নিজেদের দলীয় প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট ব্যবহার করতে পারেননি পিটিআই প্রার্থীরা। বাধ্য হয়েই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ প্রতীক ব্যবহার করতে হয়েছে তাদের।
পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান বর্তমানে কারাগারে আছেন। তার অনুপস্থিতিতে দলের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে গত নভেম্বরের শেষ দিকে নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করে পিটিআই। গত ২ ডিসেম্বর গঠিত নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান হন ইমরানের প্রধান আইনজীবী এবং তার আস্থাভাজন ব্যারিস্টার গহর খান।