রাজিয়া তূর্ণাঃ
বর্তমান অবস্থায় যেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অগ্নিসংযোগ এর দুর্ঘটনা নিত্যদিনের পত্রিকার হেডলাইন। মানুষের জনজীবন অতিষ্ঠ,আতঙ্কিত, জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় মানব সমাজ শঙ্কিত। প্রতিনিয়ত তারা দিন কাটাচ্ছে ভীতি সংকোচের মধ্য দিয়ে। তবুও টনক নড়েনি কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর। তারা দিনের পর দিন অসৎ উপায় অবলম্বন করে ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে সমাজ তথা দেশের একদিকে যেমন ক্ষতি সাধন করছে,অন্যদিকে মানব জীবনের জন্য,অগ্নিদগ্ধ জীবন নাশের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।কোন নিয়ম শৃঙ্খলা, আইনানুগ ব্যবস্থার করে লোকালয়ের ভেতর গড়ে তুলেছে অবৈধ তারের কারখানা। কারখানা তৈরি করতে গেলে যে সকল আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয় বা যে সকল বৈধ কাগজপত্র লাগে তার কোনটাই তাদের কাছে নাই।ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ারের লাইসেন্স, পরিবেশের লাইসেন্স, বিষফোকের লাইসেন্স, শ্রম অধিদপ্তরের লাইসেন্স, কোনটাই তাদের নাই।সর্বোপরি আবাসিক এরিয়া ছেড়ে শিল্প নগরীতে কারখানা গড়ে তোলা উচিত। এর কোনটাই তারা পালন করছেন না। ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ফ্যাক্টরির ধোয়াতে শিশুসহ বৃদ্ধদের শ্বাসন্তরের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।প্রতিনিয়ত ঘটছে অগ্নি দুর্ঘটনা। অকালে ঝরে যাচ্ছে শত শত মানুষের প্রাণ। ভেঙে যাচ্ছে বাবা-মার স্বপ্ন। এতিম হচ্ছে ছোট ছোট শিশু সন্তান। তবুও বিন্দুমাত্র বিবেক সাড়া দিচ্ছে না এই অসাধু ব্যবসায়ীদের। মূলত জাহাজ ভাঙা কারখানায় আনা পুরাতন জাহাজের নষ্ট হয়ে যাওয়া তার গলিয়ে নতুন লেভেল লাগিয়ে কয়েল বাঁধানো হয় এখানে। সেই লেভেল লাগানো তার ইক্যাব, ক্যাবল,আরথীন তার বিভিন্ন নামে বাজারজাত করা হচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে শর্ট সার্কের দুর্ঘটনা।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার কাছ থেকে তথ্য পেয়ে গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনীতির টিম সরজমিনে গিয়ে কেরানীগঞ্জ এলাকার হাসনাবাদ এলাকায় অনেকগুলো তার কারখানা সন্ধান পায়।যারা দিনের পর দিন অবৈধভাবে এই কারখানাগুলো পরিচালনা করে আসছে। লোকালয়ের ভেতর টিন দিয়ে অথবা ওয়ালে ঘেরা জায়গায় ঘর ভাড়া নিয়ে তৈরি করেছে এসব তারের কারখানা। সামনে সাইনবোর্ড আছে। ভেতরে গেলে দেখা একজন অপারেটর কর্মী একাধীক একাধিক লেবার মেশিন বশিয়ে সেখানে তার গলানোর কাজ করছেন এবং একজন কভারের ওপর লেভেল লাগানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। পাশে কিছু পুরাতন জাহাজের তার পড়ে থাকতে দেখা যায়। ল্যাবরেটরিতে কোনো কেমিস্ট বা ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে কোনো কার্যক্রম নেই। শুধু এবং ইলেকট্রিক কন্ট্রোল বোর্ডও নাই। বিএসটিআই, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় এক লোক জানান, প্রায় ছয় বছর ধরে তারের কারখানাটি এখানে শব্দ করে চলছে। পাশে বসবাস করছে শিশু অসংখ্য মানুষ । তবে সবসময় তারা গেট বন্ধ রেখে এ সব কাজ করেন। বাইরের কাউকে প্রবেশ করতে দেন না।
এলাকার সচেতন নাগরিকরা বলেন, যদি বৈধ শিল্প করতে হয় তাহলে শিল্প এলাকায় একটি জায়গা নিয়ে করতে হবে। এভাবে লোকালয়ের ভেতরে তাও অবৈধ শিল্প চালাচ্ছ তারা। সেটি যদি তারা আবার চালিয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্তা নেওয়া হবে।এ সম্পর্কে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবেশের ক্যাটাগরি না মেনে লোকালয়ের ভেতর শব্দদূষণ বা ধোঁয়া ছড়িয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান কাজ করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।।।