যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার কারণেই আওয়ামী লীগ কর্মী খালেদুর রহমান টিটোকে খুন করা হয়। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দিলু পাটোয়ারীর হুকুমে তার ভাই নূর মোহাম্মদ পাটোয়ারীর নেতৃত্বে টিটোর ওপর হামলা করা হয়। আলোচিত এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার অভিযোগপত্রে এমনটিই উল্লেখ করা হয়েছে।
গত চার মার্চ যশোরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনসার উদ্দিন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঘারপাড়া থানার ওসি ফিরোজ উদ্দিন। অভিযোগপত্রে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দিলু পাটোয়ারীসহ ১৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। একইসাথে বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মোল্যাসহ চারজনকে অব্যাহতি প্রদানের জন্যও আবেদন করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন, বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জহুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দ্বীন মোহাম্মদ পাটোয়ারী দিলু, তার ভাই নূর মোহাম্মদ পাটোয়ারী, হলদা গ্রামের উজির খালাসির ছেলে শরিফুল, বেতালপাড়া গ্রামের ছুরমান মোল্যার ছেলে মনিরুল কানা, এজের আলীর ছেলে সাইদ, মৃত মুনসুর বিশ্বাসের ছেলে আসাদ, শাহ আলমের ছেলে বাবু, সামসুর বিশ্বাসের ছেলে রবিউল, জয়নালের ছেলে শাহিনুর, মোস্তার মোল্যার ছেলে আজিম, হলিহট্ট গ্রামের নাজমুল হুদার ছেলে মাসুদ হোসেন, আবু তাহেরের ছেলে জসিম ও গরীবপুর গ্রামের মৃত দলিল উদ্দিন মুন্সির ছেলে রেজাউল মুন্সি।
গত বছর ১০ ডিসেম্বর বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথী। নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন আওয়ামী লীগ নেতা দ্বীন মোহাম্মদ দিলু পাটোয়ারী। এ নির্বাচনে বেতালপাড়া গ্রামের মুনতাজ মোল্যার ছেলে খালেদুর রহমান টিটো নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা চালাতে থাকেন। এতে টিটোর ওপর নাখোশ হন দিলু পাটোয়ারী ও তার লোকজন। ভোটগ্রহণের আগের দিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে খালেদুর রহমান টিটো, তার ভাই বদর উদ্দিন ও চাচা ইন্তাজ উদ্দিন বেতালপাড়া গ্রামের সরদারপাড়ার কালামের চায়ের দোকানের সামনে যাওয়ামাত্র দিলু পাটোয়ারী ও শরিফুলের হুকুমে নূর মোহাম্মদ পাটোয়ারীর নেতৃত্বে আসামিরা ওই তিনজনের ওপর হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা টিটোকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন চলে আসলে আসামিরা পালিয়ে যান। পরে টিটোকে উদ্ধার করে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু ঢাকা যাওয়ার পথেই মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় নিহত টিটোর ভাই বদর উদ্দিন বাদী হয়ে ১০ ডিসেম্বর রাতে বাঘারপাড়া থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০/৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।