কোহিনূর সুলতানা মিতুঃ
ঢাকার যানজট পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এখন যানজটে দাঁড়িয়ে থাকলে এম্বুলেন্স হিসেবে বাড়তি কোনো সুবিধা পাওয়া যায় না। অথচ একটা সময় ছিল এম্বুলেন্সের সাইরেন যে রাস্তা থেকে আসতো ট্রাফিক সদস্যরা ওই রাস্তার সিগন্যাল ছেড়ে দিতেন। যানজটে পড়ে যেসব ব্যক্তি মারা যান তাদের স্বজনদেরও আক্ষেপ করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। যানজটে আটকা পড়ে এম্বুলেন্সে মৃত্যুর সঠিক কোনো পরিসংখ্যানও নেই।
প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ থেকে ৮ ঘণ্টা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজট থাকায় এম্বুলেন্সে হাসপাতালগামী মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এর প্রতিকার হিসেবে প্রয়োজন আইনের যথাযথ প্রয়োগ, রাস্তা প্রসস্তকরণ এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সক্রিয় দায়িত্ব পালন।কিন্তু এগুলোর সবচেয়ে বড় অভাব দেখা যায় রাস্তায়।অসহায়ভাবে এম্বুলেন্স এর মানুষ চোখের সামনে দেখেন তাদের প্রিয়জনের মৃত্যু।
একাধিক এম্বুলেন্স-চালক, রোগীর স্বজন, জরুরি বিভাগের কর্মরতদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা যায়, ঢাকার বাইরে থেকে যেসব রোগী নিয়ে এম্বুলেন্স-চালকরা আসেন তারা ঢাকায় প্রবেশ করেই যানজটে পড়েন। যানজটে আটকা পড়ে বাড়তি সময় নষ্ট হওয়াতে অনেক রোগী রাস্তায়ই মারা যান। কারণ অনেক মুমূর্ষু রোগীকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য যেসব সুবিধা এম্বুলেন্সে থাকার দরকার তার ৯০ শতাংশই দেশের এম্বুলেন্সে নাই। অনেক সময় ঠিকমতো অক্সিজেন সাপোর্টটুকু দেয়াও সম্ভব হয় না।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, যানজট, প্রাইভেট কার-এর আধিক্য এবং কিছু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাফিলতির কারণে ভুগতে হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সের এবং তার যাত্রীদের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থাকতে হচ্ছে এই যানজটে। এছাড়া, দেশের অ্যাম্বুলেন্সগুলোতেও চিকিৎসা সেবার তেমন কোনো সরঞ্জাম নেই। তাই রোগীদের আরো বেশি ভুগতে হচ্ছে যানজট নামক এই বাধায়।