এস এম আলমগীর চাঁদ পাবনা জেলা প্রতিনিধি:
গ্রামীন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার পৌরসভাধীন কালাইচাড়া গ্রামে ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ” জোনাকির আলো পাঠাগার”।বর্তমানে পাঠাগার টি পরিচালিত হচ্ছে এক ঝাঁক স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধানে । তাদের সহযোগিতায় বই নেওয়া, ফেরত দেওয়া, সদস্য হওয়া ,কচি পাঠকদের সপ্তাহে একদিন ক্লাস নেওয়া থেকে শুরু করে যাবতীয় কার্য সম্পাদিত হয় ।
পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলাধীন কালাইচাড়া গ্রামের কলেজপডুযা যুবক বশির উদ্দিন । তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গ্রামীন অশিক্ষিত মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে প্রতিষ্ঠিত হয় এ পাঠাগার টি । এ বিষযে তিনি বলেন ,বর্তমানে টিকটক, ফ্রি ফায়ার, লাইকির যুগে অধিকাংশ মানুষ ঘুনে ধরা প্রযুক্তিতে আসক্ত । তাই তাদের কে আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে , ঘুনে ধরা প্রযুক্তি বিমুখ করে অবসর সসময়টাতে বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে এই সামান্যতম উদ্যোগ ।আর এই উদ্দেশ্যে কে সফল করার লক্ষ্যে এলাকার কতিপয় কলেজপডুযা যুবক কে সঙ্গে করে এ পাঠাগার গড়ার পরিকল্পনা করেন । তাদের চিন্তাধারায বহিঃপ্রকাশ ঘটে যে বই মানুষের অজ্ঞতার প্রাচীর ডিঙিয়ে মানুষ কে করবে আলোকিত । এই মহান চিন্তা চেতনা থেকেই প্রতিষ্ঠা করা হয় জোনাকির আলো পাঠাগার।
শুরুর দিকে নিজেদের কাছে থাকা কিছু বই ,নিজেদের অর্থায়নে কেনা কিছু বই দিয়ে পাঠাগারের কার্যক্রম শুরু করেন তারা ।ধীরে ধীরে বিভিন্ন ভাবে সংগ্রহ করে এবং কিছু বই উপহার হিসেবে পেয়ে বর্তমানে পাঠাগার টিতে বইয়ের সংখ্যা ৭০০ টির অধীক ।
কচি শিশু কিশোর থেকে শুরু করে যে কোন বয়সের নারী পুরুষ এখান থেকে বই সংগ্রহ করে পড়তে পারে ।জুয়েল রানা সভাপতি ও মঈনুল হক কে সাধারন সম্পাদক করে বর্তমানে ১১ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা কমিটি রয়েছে পাঠাগার টিতে । বই পড়িয়ে মানুষের জ্ঞানের আলো প্রসারিত করার পাশাপাশি পাঠাগার টি শিশু কিশোর দের মনস্তত্ত্বিক বিকাশেও গুরুত্বপুণ অবদান রেখে চলছে । বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে কবিতা / ইসলামী গান, আবৃত্তি, কুইজ প্রতিযোগিতা এবং শিশু কিশোর দের মনস্তত্ত্বিক বিকাশে প্রতিবছর আনন্দ ভ্রমনের ব্যবস্থা করা হয় পাঠাগার টির উদ্দোগে ।এ ছাড়াও সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে শিশু কিশোর দের মাঝে বই পড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় ।
পাঠাগার টি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, পাঠাগারের নির্দিষ্ট কোন ঘর নেই । খোলা মাঠে গাছের নিচে মাদুর পাটি বিছিয়ে শিশু কিশোর পাঠক গন বই পড়ে চলছে।
পরিচালনা কমিটির দিক নির্দেশনায় বইয়ের প্রতি তাদের তীব্র মমত্ববোধ সৃষ্টি হয়েছে এটা বুঝতে বাকি রইল না ।
পাঠাগার টি বর্তমানে কালাইচাড়া তথা সাঁথিয়ার মানুষের মধ্যে পাঠ্যাভ্যাস তৈরিতে ব্যাপক ভুমিকা রেখে চলছে । পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি এখানে বিভিন্ন ধরনের বই পড়েন শিক্ষার্থীরা ।
পাঠাগার টি জ্ঞানের ভান্ডার কে সমৃদ্ধ করে চলছে যা ভবিষ্যতে আলোকিত মানুষ গরতে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখবে ।
তাই পাঠাগার টির উন্নয়নে দেশের শিক্ষানুরাগী ও বিত্তবানদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন পাঠাগার কতৃপক্ষ ।